বাঙালি জাতি প্রতিবছর পহেলা বৈশাখ নববর্ষ পালন করে। কেন? কারণ সেই অতীতকাল থেকে এই প্রথা চলে আসছে। আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলি। ভাষার প্রতি আমাদের আবেগ প্রবল। কারণ এই ভাষাও আমরা পূর্বপুরূষদের কাছ থেকেই পেয়েছি। এরুপ অতীতের অভ্যাস, শিক্ষা, ভাষা, শিল্প, সাহিত্য-সংস্কৃতি, সবই হচ্ছে ঐতিহ্য। বর্তমানে আমরা যা লাভ করেছি তার সবই অতীতের এই ঐতিহ্যের ক্রমবিবর্তন। আর এসবের বিবরণই হল ইতিহাস।
উৎপত্তিগত দিক থেকে বিচার করলে, ‘ইতিহাস’ শব্দটি এসেছে ‘ইতিহ’ ও ‘আস’ শব্দ থেকে। ‘ইতিহ’ মানে হচ্ছে ‘ঐতিহ্য’; আর ‘ইতিহাস‘ মানে ‘এমনই ছিল’ বা ‘এরুপ ঘটেছিল’।
এর ইংরেজি প্রতিশব্দ ‘History’ যা এসেছে গ্রিক ‘Historia’ শব্দ থেকে। যার আভিধানিক অর্থ ‘সত্যানুসন্ধান’ বা ‘গবেষণা’। খ্রিষ্টপূর্ব ৫ম শতকে শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন গ্রিক ঐতিহাসিক হেরোডোটাস। তিনি গ্রিস ও পারস্যের যুদ্ধ ও গ্রিসের বিজয়গাথা বর্ণনা করেছিলেন যেন ভবিষ্যৎ প্রজন্ম উৎসাহিত ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়। তাকে ইতিহাসের জনক বলা হয়।
হেরোডোটাস-এর মতে,
ইতিহাস হলো যা সত্যিকার অর্থে ছিল বা সংঘটিত হয়েছিল তা অনুসন্ধান করা ও লেখা।
তিনি ইতিহাস ও গবেষণা ধারণা দুটিকে একত্র করেন।
ই. এই. কার-এর মতে,
ইতিহাস হলো বর্তমান ও অতীতের মধ্যে এক অন্তহীন সংলাপ।
র্যাপসন-এর মতে,
ইতিহাস হলো ঘটনার বৈজ্ঞানিক ও ধারাবাহিক বর্ণনা।
লিওপোল্ড ফন র্যাঙ্কে-এর মতে,
প্রকৃতপক্ষে যা ঘটেছিল তার অনুসন্ধান ও সত্য বিবরণই ইতিহাস।
জার্মান এই ভদ্রলোককে আধুনিক ইতিহাসের জনক বলা হয়।
সুতরাং আমরা বলতে পারি,
ইতিহাস হচ্ছে মানব সভ্যতার বিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন কর্মকান্ডের ধারাবাহিক ও সত্যনিষ্ঠ বিবরণ।
সঠিক ইতিহাস সব সময় সত্যকে নির্ভর করে প্রতিষ্ঠিত হয়।