অ-নে-ক অ-নে-ক কাল আগের কথা।
মানুষ তখন বাস করত বন-জঙ্গলে, গুহায়। জীবজন্তু শিকার করে খেত। সভ্যতার বিকাশ হয়নি তখনও। সময় নির্ধারণের একমাত্র অবলম্বন ছিল সূর্য। যখন সূর্য দেখা যেত তখনকার সময় হলো দিন; আর সূর্য ডুবে গেলে শুরু হতো রাত।
এভাবেই দিন-রাতের ধারণা আসে। আর এই সময়কে ভাগ করার ধারণাও তখন থেকেই আসে। কীভাবে ?
আগেই বলেছি মানুষ তখন বাস করত বন-জঙ্গলে। তাই তাদেরকে অন্যান্য জীবজন্তুর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য রাত জেগে পাহাড়া দিতে হতো। যেহেতু তারা দলবদ্ধভাবে বসবাস করত তাই তারা একইসঙ্গে জেগে থেকে পাহাড়া দেওয়া বাদ দিয়ে রাতকে কয়েকটি অংশে ভাগ করে নিত এবং এক এক ভাগ এক এক জন পাহাড়া দিত। এই এক একটি ভাগকে বলা হতো “ওয়াচ”। সম্ভবত এখান থেকেই ইংরেজি “ওয়াচ” শব্দটি আসে। যার বাংলা প্রতিশব্দ “ঘড়ি ”। আর “ওয়াচমেন” মানে পাহারাদার। কিন্তু তখন সময় কেবল ভাগ পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাকল; গণনা শুরু হয়নি।
সময় বইতে থাকল। পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানে জন্ম নিতে থাকল নানা রকম সভ্যতা। যেমন: মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে ইউফ্রেটিস ও টাইগ্রিস নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠে মেসোপটিমিয়া সভ্যতা; মিশরের নীল নদকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠে মিশরীয় সভ্যতা; ভারতবর্ষে সিন্ধু নদকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠে সিন্ধু সভ্যতা ইত্যাদি। মেসোপটেমিয়া সভ্যতাতেই সর্বপ্রথম সময়কে গণনা করার ইতিহাস পাওয়া যায়। আবির্ভাব ঘটে বছর, মাস, সপ্তাহের ধারণার; যা পরিবর্তীত হয়ে বর্তমান রুপ ধারণ করেছে। অন্যান্য সভ্যতাতেও সময় গণনার ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতির উদ্ভব ঘটে। ফলে প্রয়োজন পরে সময় গণনার জন্য আন্তর্জাতিক পদ্ধতি উদ্ভাবন করার; একক প্রচলিত করার। স্বীকৃতি দেয়া হয় সেকেন্ডকে। কোথায় শুরু হয়েছিল আর কোথায় এসে দাড়িয়েছে এই গণনা। এগুলোই ‘সময় গণনার ইতিহাস’ সিরিজের আলোচ্য বিষয়।