গামা রশ্মি কী? এর বৈশিষ্ট্য, ব্যবহার এবং ক্ষতিকর প্রভাব

গামা রশ্মি
গামা রশ্মি

গামা রশ্মি

তেজস্ক্রিয় পদার্থের নিউক্লিয়াস থেকে উচ্চশক্তিসম্পন্ন যে তড়িতচৌম্বক বিকিরণ নির্গত হয়, তাকে গামা রশ্মি বলে।

গামা রশ্মির প্রতীক γ।

 

গামা রশ্মির বৈশিষ্ট্য

১. গঠন: গামা রশ্মি মূলত উচ্চশক্তির ফোটন।

২. আধান: গামা রশ্মির কোনো আধান নেই।

৩. ভর: গামা রশ্মির ভর শূন্য।

৪. গতি: এটি আলোর গতিতে চলে।

৫. তরঙ্গদৈর্ঘ্য: এর তরঙ্গদৈর্ঘ্য 0.01 nm – 0.001 pm ।

৬. প্রবেশ ক্ষমতা: এর ভেদনযোগ্যতা অত্যন্ত বেশি।

৭. আয়নীয়ন ক্ষমতা: এর আয়নীকরণ ক্ষমতা আলফা ও বিটা কণিকার চেয়ে কম।

 

গামা রশ্মির ব্যবহার

১. চিকিৎসা ও ক্যান্সার থেরাপি

গামা নাইফ রেডিওথেরাপি: কোবাল্ট-৬০ (Co-60) এবং সিজিয়াম-১৩৭ (Cs-137) গামা রশ্মি নির্গত করে; যা ক্যান্সার কোষ ধ্বংস করতে ব্যবহৃত হয়।

রেডিওথেরাপি: ক্যান্সার কোষ টার্গেট করে ধ্বংস করতে গামা রশ্মি ব্যবহার করা হয়।

২. মেডিকেল ইমেজিং

পেট স্ক্যান (PET Scan): পজিট্রন এমিশন টমোগ্রাফিতে (PET) গামা রশ্মি ব্যবহৃত হয়।

রেডিওনিউক্লাইড ইমেজিং: টেকনেটিয়াম-৯৯ (Tc-99m) শরীরের অভ্যন্তরীণ চিত্র তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়।

৩. শিল্প ও নিরাপত্তা

শিল্পে ত্রুটি নির্ণয়: ঢালাইয়ের ত্রুটি, ধাতব কাঠামোর ফাটল শনাক্ত করতে গামা রশ্মি ব্যবহৃত হয়।

নিরাপত্তা স্ক্যানার: বিমানবন্দরে ব্যাগ ও কার্গো স্ক্যান করতে গামা রশ্মি ব্যবহৃত হয়।

৪. পরমাণু শক্তি ও গবেষণা

নিউক্লিয়ার রিয়েক্টর মনিটরিং: পরমাণু চুল্লির বিকিরণ পর্যবেক্ষণে গামা রশ্মি ব্যবহৃত হয়।

মহাকাশ গবেষণা: মহাবিশ্বের গঠন বোঝার জন্য গামা রশ্মির টেলিস্কোপ ব্যবহার করা হয়।

 

গামা রশ্মির ক্ষতিকর প্রভাব

১. বাহ্যিক প্রভাব: গামা রশ্মি সহজেই ত্বক ভেদ করে শরীরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারে।

২. ডিএনএ মিউটেশন: এটি ডিএনএ পরিবর্তন ঘটিয়ে ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে।

৩. তেজস্ক্রিয় বিষক্রিয়া: দীর্ঘমেয়াদী এক্সপোজার রেডিয়েশন সিকনেস, লিউকেমিয়া এবং মৃত্যুর কারণ হতে পারে।

সম্পর্কিত অনুচ্ছেদসমূহ