আলফা কণা
তেজস্ক্রিয় পদার্থ থেকে দুটি প্রোটন ও দুটি নিউট্রন দিয়ে গঠিত যে চার্জযুক্ত কণিকা নির্গত হয়, তাকে আলফা কণিকা বলে।
এটি হিলিয়াম নিউক্লিয়াসের সমতুল্য।
একটি সাধারণ আলফা ক্ষয়ের (Alpha Decay) সমীকরণ হলো:
আলফা কণিকার বৈশিষ্ট্য:
১. গঠন: আলফা কণিকা দুটি প্রোটন এবং দুটি নিউট্রন নিয়ে গঠিত। অর্থাৎ এটি হিলিয়াম-৪ নিউক্লিয়াসের সমতুল্য।
২. আধান: এটি পজিটিভ চার্জযুক্ত (+2)।
৩. গতিশীলতা: এটি তুলনামূলক ধীরগতিসম্পন্ন (প্রায় 5% আলোর গতির সমান)।
৪. প্রবেশ ক্ষমতা: এটি বায়ুতে কয়েক সেন্টিমিটার পর্যন্ত ভ্রমণ করতে পারে। পাতলা কাগজের পৃষ্ঠা দিয়েই আলফা কণিকাকে থামানো যায়।
৫. আয়নীয়ন ক্ষমতা: অত্যন্ত উচ্চ। বায়ু বা শরীরের কোষকে সহজেই আয়নিত করতে পারে।
৬. শিল্প ও গবেষণা: তেজস্ক্রিয়তার পরিমাণ নির্ণয় এবং ধাতুর ঘনত্ব পরিমাপে আলফা কণিকা ব্যবহার করা হয়।
আলফা কণিকার ব্যবহার:
১. ধোঁয়া শনাক্তকারী : আমেরিসিয়াম-241 নামক এক ধরনের রেডিওসক্রিয় পদার্থ ধোঁয়া শনাক্তকারী ডিভাইসে ব্যবহৃত হয়।
২. ক্যান্সার চিকিৎসা: কিছু নির্দিষ্ট ক্যান্সার চিকিৎসায় আলফা রশ্মি ব্যবহৃত হয়।
৩. নিউক্লিয়ার ব্যাটারি: স্পেস প্রোব বা দূরবর্তী শক্তির উত্স হিসেবে আলফা বিকিরণ ব্যবহার করা হয়।
আলফা কণিকার ক্ষতিকর প্রভাব:
আলফা কণিকা বাহ্যিকভাবে খুব বেশি ক্ষতিকর নয়। কারণ এটি ত্বক ভেদ করতে পারে না। কিন্তু যদি এটি শরীরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে (শ্বাস, খাবার বা পানির মাধ্যমে) তবে ডিএনএ-এর মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এছাড়া ফুসফুসের ক্যান্সার (রেডন গ্যাসের সংস্পর্শে আসলে), ডিএনএ মিউটেশন এবং তেজস্ক্রিয় বিষক্রিয়া ঘটাতে পারে।