বাংলাদেশের দক্ষিণে রয়েছে বিশাল বঙ্গোপসাগর। এর ক্ষেত্রফল ২১ লক্ষ বর্গ কি.মি.
বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের-
- মোট সমুদ্রসীমা: ১,১৮,৮১৩ বর্গ কি.মি.
- উপকূল: ৭১৬ কি.মি.
- রাজনৈতিক সমুদ্রসীমা: ১২ নটিক্যাল মাইল
- অর্থনৈতিক সমুদ্রসীমা: ২০০ নটিক্যাল মাইল
- মহীসোপান অঞ্চল: ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল
সমুদ্র অঞ্চল নটিক্যাল মাইলে মাপার কারণ
পৃথিবীর গোলাকার প্রকৃতির কারণে বিমান চলাচল ও সমুদ্র অঞ্চলে নাবিকদের সুবিধার জন্য নটিক্যাল মাইল এককটি ব্যবহার করা হয়।
পৃথিবীর গোলকের পৃষ্ঠে ১ মিনিট দ্রাঘিমা ও অক্ষাংশের দুরত্বকে এক নটিক্যাল মাইল বলে।
১ মাইল = ১.৬০৯৩ কি.মি.
১ নটিক্যাল মাইল = ১.১৫ মাইল
= ১.৮৫৩ কি.মি.
সমুদ্রসীমা নিয়ে জাতিসংঘের আইন
আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইন, ১৯৮২
UNCLOS- United Nations Convention on the law of the Sea
এই আইন অনুযায়ী, কোনো দেশের সমুদ্র অঞ্চল ভিত্তিরেখা থেকে নির্ধারিত হবে। দেশটির
- রাজনৈতিক সমুদ্রসীমা হবে ১২ নটিক্যাল মাইল
- অর্থনৈতিক সমুদ্রসীমা হবে ২০০ নটিক্যাল মাইল
- মহীসোপান অঞ্চল হবে ৩৫০ নটিক্যাল মাইল
ভিত্তিরেখা: ভাটার সময় পানি যে পর্যন্ত নেমে যায় সেখানে একটি রেখা টানলে তা ভিত্তিরেখা বলে গণ্য হবে। এর অভ্যন্তরে থাকা জল ইন্টারনাল ওয়াটার।
রাজনৈতিক সমুদ্রসীমা/আঞ্চলিক সমুদ্রসীমা/উপকূলীয় সীমা (Territorial Sea): রাষ্ট্রের নিজস্ব অঞ্চল। রাষ্ট্র এখানে যা ইচ্ছে করতে পারবে। অর্থাৎ অনুমতি ছাড়া এই অঞ্চলে প্রবেশ করা যাবে না।
উল্লেখ্য রাজনৈতিক সমুদ্রসীমার পর আরও ১২ নটিক্যাল মাইল অঞ্চলকে স্বচ্ছ অঞ্চল (Contiguous Zone) বলা হয়।
অর্থনৈতিক সমুদ্রসীমা (Exclusive Economic Zone): রাষ্ট্র এখানে সকল প্রকার অর্থনৈতিক কর্মকান্ড করতে পারবে। যেমন মৎস্য ও খনিজ সম্পদ আহরণ করতে পারবে। এ অঞ্চলে প্রবেশের জন্য কারো অনুমতি লাগবে না। তবে এখান থেকে সম্পদ অন্য কোনো দেশ নিয়ে যেতে পারবে না।
মহীসোপান অঞ্চল (Continental Shelf): সমুদ্রজলে নিমজ্জিত মোটামুটি ১০০ মি. গভীরতা পর্যন্ত মহাদেশীয় প্রান্তভাগকে মহীসোপান বলে। এর পর থেকেই গভীর সমুদ্র অঞ্চল শুরু। কিন্তু যদি এর পরও অগভীর অঞ্চল থাকে তবে তার দাবিদার উপকূলীয় দেশ। এ কারণেই বাংলাদেশের মহীসোপান অঞ্চল ৩৫০ না হয়ে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল হয়েছে।
(ভূগোল অংশে সমুদ্রের গঠন (মহীসোপান, মহীঢাল, গভীর সমুদ্রের সমভূমি, মহাসাগরীয় খাত) নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।)
মহীসোপানের পর গভীর সমুদ্র অঞ্চলকে মুক্ত অঞ্চল বলে। এটি কোন দেশের অধীনে নয়।
বাংলাদেশ সরকার ১৯৭৪ সালে সমুদ্র অঞ্চল নিয়ে আইন পাশ করে। আইনটির নাম The Territorial Water and Meritime Zone Act, 1974.
এই আইন অনুসারে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমার সাথে মায়ানমার ও ভারতের সমুদ্রসীমার বিরোধ সৃষ্টি হয়। ফলে বাংলাদেশ ২০০৯ সালে ITLOS-এ মায়ানমার ও PCA-এ ভারতের বিরুদ্ধে মামলা করে।
ITLOS – International Tribunal for the Law of the Sea (1988)
সদর দপ্তর: হামবুর্গ, জার্মানি
২০১২ সালের ১৪ই মার্চ মামলার রায় প্রদান করে।
৭০,০০০ বর্গকি.মি. (সম্পূর্ণ) অঞ্চল বাংলাদেশ পায়।
PCA – Parmanent Court of Arbitration
সদর দপ্তর: হেগ. নেদারল্যান্ড
এটি জাতিসংঘের একটি প্রতিষ্ঠান।
২০১৪ সালের ৭ই জুলাই মামলার রায় প্রদান করে।
২৫,৬০২ বর্গকি.মি. থেকে বাংলাদেশ পায় ১৯,৪৬৭ বর্গকি.মি.।