গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান
অনুচ্ছেদ ২৩ ক.
উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের সংস্কৃতি
রাষ্ট্র বিভিন্ন উপজাতি, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা, নৃ-গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের অনন্য বৈশিষ্ট্যপূর্ণ আঞ্চলিক সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও বিকাশের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন।
উপজাতি:
বাঙালি জাতির অন্তর্গত যে সকল মানুষ বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করে কিন্তু নিজেদের আলাদা ভাষা ও সংস্কৃতি রয়েছে তারাই উপজাতি।
ষষ্ঠ জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২ অনুযায়ী, বাংলাদেশে ৫০ উপজাতির লোক বাস করে।
এরা প্রধানত পার্বত্য চট্টগ্রাম তথা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান বাস করে।
উল্লেখযোগ্য কয়েকটি উপজাতি হচ্ছে চাকমা, মারমা, সাঁওতাল, গারো, রাখাইন, পাঙন ইত্যাদি।
ক্ষুদ্র জাতিসত্তা:
ক্ষুদ্র জাতিসত্তা (Minority Ethnic Groups) বলতে বোঝায় সমাজের সেই জনগোষ্ঠীগুলোকে, যারা সংখ্যার দিক থেকে প্রধান জনগোষ্ঠী বা সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠীর তুলনায় ছোট এবং প্রায়ই যাদের নিজস্ব সাংস্কৃতিক, ধর্মীয়, ভাষাগত বা জাতিগত পরিচয় থাকে।
এই জাতিসত্তাগুলো সাধারণত বৃহত্তর সমাজে সংখ্যালঘু হিসেবে বিবেচিত হয় এবং তাদের অধিকার, সংস্কৃতি ও পরিচিতি সংরক্ষণের জন্য বিশেষ মনোযোগ প্রয়োজন।
নৃ-গোষ্ঠী:
৭০ হাজার বছর পূর্বে আধুনিক মানুষ আফ্রিকা থেকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়লে তাদের মধ্যে কিছু পরিবর্তন হয়। প্রাগৈতিহাসিক যুগে চারটি গোষ্ঠী বা দল সৃষ্টি হয়েছিল। বর্তমান ধারণা অনুযায়ী বিশ্বের সকল মানুষ মূলত ঐ চারটি গোষ্ঠী থেকে জন্ম লাভ করেছে। এদের নৃগোষ্ঠী বলা হয়।
চারটি নৃগোষ্ঠী হলো:
- নেগ্রিটো,
- অস্ট্রালয়েড,
- মঙ্গোলীয় ও
- ককেশীয়।
সম্প্রদায়:
সম্প্রদায় বলতে বোঝানো হয় একটি গোষ্ঠী বা দলকে, যারা সাধারণ বৈশিষ্ট্য, বিশ্বাস, সংস্কৃতি, ধর্ম বা অন্যান্য সামাজিক উপাদানগুলো ভাগাভাগি করে এবং একে অপরের সঙ্গে পারস্পরিক যোগাযোগ ও সম্পর্ক বজায় রাখে। সম্প্রদায় একটি সামাজিক গঠন যা সাধারণত তার সদস্যদের মধ্যে দৃঢ় বন্ধন এবং সহযোগিতা সৃষ্টি করে।
আদিবাসী:
কোন এলাকায় বসবাসরত সর্বাপেক্ষা প্রাচীন জনবসতিকে বলা হয় আদিবাসী।
বাংলাদেশের উপজাতিরা নিজেদের উপজাতি না বলে আদিবাসী পরিচয় দিতে অধিক স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।