সমাজতন্ত্র ও শোষণমুক্তি

সমাজতন্ত্র ও শোষণমুক্তি
সমাজতন্ত্র ও শোষণমুক্তি

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান

 

অনুচ্ছেদ ১০

সমাজতন্ত্র ও শোষণমুক্তি

মানুষের উপর মানুষের শোষণ হইতে মুক্ত ন্যায়ানুগ ও সাম্যবাদী সমাজলাভ নিশ্চিত করিবার উদ্দেশ্যে সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা হইবে।

 

অর্থনৈতিক ব্যবস্থা:

উৎপাদনের উপাদান বা উপকরণ চারটি। যথা: ভূমি, শ্রম, মূলধন ও সংগঠন। এগুলোর উপর কার নিয়ন্ত্রণ থাকবে তার উপর ভিত্তি করে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা মূলত দুই প্রকার। যথা:

১.  সমাজতন্ত্র:

এ ব্যবস্থায় উৎপাদনের উপকরণের উপর রাষ্ট্রীয় মালিকানা থাকে। ফলে সরকার ঠিক করে কোনটা কতটা উৎপাদন করতে হবে। এতে লাভের চেয়ে প্রয়োজনকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়।

২. পুঁজিবাদ:

এ ব্যবস্থায় উৎপাদনের উপকরণের উপর ব্যক্তির মালিকানা থাকে। ফলে ব্যক্তি ঠিক করে কোনটা কতটা উৎপাদন করবে। এতে লাভকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। ফলে শোষণের ধারণা আসে।

 

সামন্ততন্ত্র পরিবর্তিত হয়ে পুঁজিবাদে পরিণত হয়েছে। ভবিষ্যতে এটি সমাজতন্ত্র ও শেষে সাম্যবাদে শেষ হবে।

উল্লেখ্য কৃষিভিত্তিক সামন্তবাদে ভূমির মালিকানা থাকে সামন্ত প্রভুদের হাতে। ফলে তারাই ভূমিহীনদের দিয়ে কাজ করাত।

 

সাম্যবাদ বা কমিউনিজম:

সাম্যবাদ বা কমিউনিজম (Communism) এমন এক রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক মতবাদ; যা ব্যক্তিগত মালিকানার অবসান ঘটিয়ে সম্পদের সমবণ্টন ও শ্রেণীহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে পরিচালিত হয়।

সাম্যবাদের মূল ভিত্তি হলো যে সমস্ত মানুষ সমান এবং সমাজের সমস্ত সম্পদ সমভাবে সকলের মধ্যে ভাগাভাগি করে দেওয়া উচিত।

 

বাংলাদেশের সংবিধানের ১০ নং অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সমাজতন্ত্রিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থার প্রচলন করতে হবে যা পরবর্তীকালে সাম্যবাদে পরিণত হবে।

সম্পর্কিত অনুচ্ছেদসমূহ